টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির উপায় জেনে নিন

টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির উপায় হলো: নিয়মিত ব্যায়াম, পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম নিশ্চিত করা। টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি করার আরো যে সকল উপায় রয়েছে সেগুলো নিচে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির উপায়

টেস্টোস্টেরন হরমোন সুস্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টেস্টোস্টেরন হরমোন শরীরে কমে গেলে কিংবা অধিক মাত্রায় বৃদ্ধি পেলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই, শরীরের সর্বদা টেস্টোস্টেরন হরমোনের ব্যালেন্স রাখতে হবে। অতিরিক্ত কমে যাওয়ার কিংবা বৃদ্ধি পাওয়ার যে সকল কারণ রয়েছে সেগুলো পরিহার করতে হবে। 

যাইহোক কোন কারনে যদি আপনার শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে যায় তাহলে অবশ্যই তা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করতে হবে। নিচে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির উপায় সমূহ বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আশাকরি নিম্ন বর্ণিত নিতে তথ্য গুলো মনোযোগের সাথে পড়লে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির উপায় সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন: প্রাকৃতিক উপায়ে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি পায়। 
  • প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান: অবশ্যই আপনাকে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। সমৃদ্ধ খাবার না খেলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের ঘাটতি দেখা দেয়, যার মধ্যে অন্যতম একটি হলো টেস্টোস্টেরন হরমোনের ঘাটতি। তাই নিয়মিত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান, সুস্থ থাকুন।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম নিশ্চিত করুন: ঘুম কম হলে তা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যাওয়ার যে সকল কারণ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো পর্যন্ত পরিমাণ ঘুম না হওয়া। তাই অবশ্যই আপনাকে প্রতিদিন পর্যন্ত পরিমাণে ঘুম নিশ্চিত করতে হবে।
  • ভিটামিন বি যুক্ত খাবার খান: ভিটামিন বি এর অভাবে অনেক সময় টেস্টোস্টেরন হরমোনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তাই যে সকল খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন বি রয়েছে সেই খবরগুলো বেশি বেশি করে খেতে হবে। 
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন: অতিরিক্ত ওজন বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার কারণ। তাই অবশ্যই আপনাকে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ওজন অতিরিক্ত হয়ে গেলে তা টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে। 
  • চিনি পরিহার করুন: চিনি খাওয়া কমিয়ে দিন। অতিরিক্ত চিনি খেলে তা বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যে সকল কারণে টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যায়, তার মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হলো চিনি জাতীয় খাবার অধিক পরিমাণে খাওয়া।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন:  সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা অপরিহার্য। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি পায়।
  • ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন: টেস্টোস্টেরন হরমোন জনিত সমস্যা যদি অনেক বেশি দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে বসে আপনাকে একজন অপেক্ষা ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে এবং উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। 

টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ট্যাবলেট

টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি করার জন্য নিম্ন বর্ণিত ঔষধ গুলো খাওয়া যেতে পারে। তবে অবশ্যই রেজিস্টার ডাক্তারের পরামর্শক্রমে  ঔষধ খেতে হবে। নিজে নিজে ফার্মেসি থেকে ঔষধ ক্রয় করে খেলে তা শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত কখনোই নিজে নিজে ফার্মেসি থেকে ঔষধ ক্রয় করে খাবেন না।

  • Testes Siccati 3x
  • Androfil 40Mg Capsule
  • Prime male
  • Nuvir 40Mg Capsule
  • Nugenix
  • TestRx
  • Testosterone Undecanoate 40Mg Capsule
  • Andriol 40Mg Capsule
  • Testogen

টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যায় কেন

টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির উপায় সমূহ সম্পর্কে উপরে আলোচনা করা হয়েছে। টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যায় কেন? সে বিষয়ে সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে। টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যাওয়ার যে সকল কারণ রয়েছে সেগুলোর মধ্যে থেকে অন্যতম কয়েকটি কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো।

  • বার্ধক্য জনিত কারণে।
  • মানসিক চাপ।
  • পুষ্টিহীন খাবার।
  • ব্যায়াম না করা।
  • অতিরিক্ত ওজন।
  • ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়া।
  • অ্যালকোহল পান করা।
  • ঔষধ এরপর সব প্রতিক্রিয়া।
  • হরমোনাল ডিসঅর্ডার।

টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির খাবার তালিকা

কিছু খাবার রয়েছে যেই খাবারগুলো টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। আপনি যদি নিয়মিত এই খাবারগুলো খান, তাহলে আশা করা যায় আপনার টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি পাবে। টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির খাবার তালিকা নিম্নরূপ।

  • চর্বিবিহীন মাংস।
  • ডিম।
  • সামুদ্রিক মাছ।
  • বাদাম।
  • সিম জাতীয় সবজি।
  • দুধ ও দুগ্ধ জাত খাবার।
  • শাকসবজি।
  • ভিটামিন সি যুক্ত ফল।

টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ব্যায়াম

উপরে উল্লেখিত টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির উপায় সমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করার পাশাপাশি যদি আপনি নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাহলে প্রাকৃতিকভাবে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি পাবে। যেকোনো ধরনের ফিজিক্যাল এক্টিভিটিস টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধিতে সহায়ক। টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির জন্য যা যা করতে পারেন:

  • সাইক্লিং।
  • সুইমিং।
  • হাই কিং।
  • টেনিস খেলা।
  • ফুটবল খেলা।

টেস্টোস্টেরন এর স্বাভাবিক মাত্রা কত

টেস্টোস্টেরন হরমোনের একটি নির্দিষ্ট মাত্রা রয়েছে এই মাত্রার চেয়ে কম কিংবা বেশি হলে তা শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে। পুরুষের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্র এক রকম আবার নারীদের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা ভিন্ন। নিচে নারী এবং পুরুষের টেস্টোস্টেরন হরমোনের স্বাভাবিক মাত্রা কত তা তুলে ধরা হলো।


প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের ক্ষেত্রে:

৩০০ থেকে ১০০০ ন্যানোগ্রাম প্রতি ডেসিলিটার (ng/dL) বা ১০.৪ থেকে ৩৪.৭ ন্যানোমোল প্রতি লিটার (nmol/L): মোট টেস্টোস্টেরন।

৫ থেকে ২০ ন্যানোগ্রাম প্রতি ডেসিলিটার (ng/dL) বা ০.১৭ থেকে ০.৬৯ ন্যানোমোল প্রতি লিটার (nmol/L): ফ্রি টেস্টোস্টেরন। 


প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের ক্ষেত্রে:

১৫ থেকে ৭০ ন্যানোগ্রাম প্রতি ডেসিলিটার (ng/dL) বা ০.৫ থেকে ২.৪ ন্যানোমোল প্রতি লিটার (nmol/L): মোট টেস্টোস্টেরন। 

০.৩ থেকে ১.৯ ন্যানোগ্রাম প্রতি ডেসিলিটার (ng/dL) বা ০.০১ থেকে ০.০৭ ন্যানোমোল প্রতি লিটার (nmol/L) ফ্রি টেস্টোস্টেরন।

টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির হোমিও ঔষধ

টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির উপায় সমূহের মধ্য থেকে অন্যতম একটি উপায় হলো হোমিও চিকিৎসা করা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হোমিও ঔষধ কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে বিশেষ করে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধিতে হোমের চিকিৎসা গুরুত্বপূর্ণ। 

অভিজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে যদি আপনি হোমিও ঔষধ খান, তাহলে আশা করা যায় অল্প কিছুদিনের মধ্যেই টেস্টোস্টেরন হরমোনের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

কিছু কিছু আমি ঔষধের নাম তুলে ধরা হলো ডাক্তারের পরামর্শক্রমে এই ওষুধগুলো সেবন করতে পারেন। আশা করি নিয়মিত এগুলো সেবন করলে আপনার টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি পাবে।

  • এসিড ফস
  • এভেনা সেটাইভা 
  • কার্বোভেজ 
  • নাক্স ভোমিকা

টেস্টোস্টেরন হরমোন বেশি হলে কি হয়

টেস্টোস্টেরন হরমোন কম হলে যেমন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়, ঠিক তেমনি ভাবে এর মাত্রা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে বৃদ্ধি পায় তাহলে কিন্তু বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি পেলে যে সকল সমস্যা হতে পারে সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।

  • ব্রণ উঠা।
  • ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যাওয়া।
  • মুখে চুল গজানো।
  • স্বর পরিবর্তন হওয়া।
  • মুড সুইং।
  • মাথাব্যথা।
  • ঘুম কম হওয়া।
  • ব্লাড প্রেসার বেড়ে যাওয়া।

টেস্টোস্টেরন হরমোনের অভাবে কি হয়

টেস্টোস্টেরন হরমোনের অভাবে শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে এর মাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণে কমে যাওয়ার ফলে যৌ*ন আকাঙ্ক্ষা কমে যেতে পারে, এছাড়াও আরো যে সকল সমস্যা হতে পারে সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো। 

  • যৌ*ন আকাঙ্ক্ষা কমে যায়।
  • লি*ঙ্গো*ত্থান জনিত সমস্যা দেখা দেয়।
  • কর্মদক্ষতা কমে যায়।
  • পেশী শক্তি কমে যায়।
  • তলপেটে চর্বি বেড়ে যায়।
  • সন্তান জন্মদান ক্ষমতা কমে যায়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url

আরো পড়ুন