নোয়াখালী কিসের জন্য বিখ্যাত | নোয়াখালীর বিখ্যাত খাবার
বাংলাদেশের স্বনামধন্য একটি জেলা হল নোয়াখালী। বাংলাদেশের যতগুলো প্রাচীন জেলা আছে তার মধ্যে থেকে নোয়াখালী অন্যতম একটি জেলা। এই জেলার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে প্রাচীন ইতিহাস এবং ঐতিহ্য। নোয়াখালী মূলত নোয়াখাইল্লা ভাষার জন্য বিখ্যাত। বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্তে নোয়াখালীর ভাষায় কথা বললে সকলেই বুঝে যায় যে, এই ব্যক্তির বাড়ি নোয়াখালীতে। নোয়াখালী সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগের সাথে পড়তে থাকুন।
নোয়াখালী কিসের জন্য বিখ্যাত
বিশেষ কিছু খাবার, দর্শনীয় স্থান এবং সর্বোপরি নোয়াখাইল্লা ভাষার জন্য নোয়াখালী বিখ্যাত। নোয়াখালীর বিখ্যাত খাবার সমূহ দর্শনীয় স্থান সমূহসহ নোয়াখালী সম্পর্কে আরো বিস্তারিত নিচে উল্লেখ করা হবে। তাই যদি আপনি মনোযোগ সহকারে সম্পন্ন আর্টিকেলটি পড়েন তাহলে নোয়াখালী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।
নোয়াখালীর দর্শনীয় স্থান | নোয়াখালীর বিখ্যাত স্থান
নোয়াখালীতে প্রচুর দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তাই চাইলে আপনি নোয়াখালী ভ্রমণে যেতে পারেন। নিঝুম দ্বীপ, স্বর্ণ দ্বীপ সহ আরো বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর নোয়াখালী। গান্ধি আশ্রম, মাইজদী কোর্ট সহ আরো বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনার জন্য নোয়াখালী বিখ্যাত। তাই যদি আপনি কখনো নোয়াখালী ভ্রমণে যান তাহলে বিখ্যাত এই স্থাপনা গুলো দেখে আসতে পারেন।
ঐতিহাসিক এই স্থাপনা গুলোর সাথে জড়িয়ে আছে বিভিন্ন ইতিহাস এবং ঐতিহ্য, স্থানগুলো ভ্রমণ করলে আপনি সেখানকার ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবেন। নোয়াখালীতে আরো যেসকল দর্শনীয় এবং বিখ্যাত স্থান রয়েছে সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিনোদন কেন্দ্র ও পার্ক:
- নোয়াখালী ড্রীম ওয়ার্ল্ড পার্ক - ধর্মপুর
- গ্রীন পার্ক - চাতারপাইয়া বাজার সংলগ্ন, সোনাইমুড়ী
- চৌমুহনী পৌর পার্ক - আলীপুর, চৌরাস্তা
- দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা পার্ক - হাতিয়া
মাজার ও ধর্মীয় স্থান:
- শাহ আবদুল আজিজ (রঃ) মাজার শরীফ - বারাহীপুর, সদর, নোয়াখালী
- গাজী এয়াকুব আলী (রঃ) মাজার শরীফ - সেনবাগ
- কল্যান্দী সার্বজনীন দুর্গা মন্দির
- এয়াকুব আলী ব্যাপারী জামে মসজিদ - সোনাপুর
- বজরা শাহী মসজিদ
- ফকির ছাড়ু মিজি (রহ.) সাহেবের দরগাহ - মাইজদী
- নলুয়া মিঞা বাড়ি জামে মসজিদ - সেনবাগ
- পশ্চিম নাটেশ্বর মিয়ন হাজী শাহী জামে মসজিদ - সোনাইমুড়ী
- মোর্শেদ আলম শাহী জামে মসজিদ - সোনাইমুড়ী
- বুড়ির হাট জামে মসজিদ - ৭ নং পূর্ব চরবাটা, সুবর্ণচর, নোয়াখালী
- নোয়াখালী জেলা জামে মসজিদ
- সোনাইমুড়ী কালিবাড়ী
দ্বীপ ও উদ্যান :
- নিঝুম দ্বীপ - হাতিয়া
- নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যান
- ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল - চর বাটা
- স্বর্ণ দ্বীপ - হাতিয়া উপজেলা
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য:
- কমলার দিঘী - হাতিয়া
- কেশার পাড় দিঘী - সেনবাগ
- মাইজদী কোর্ট বিল্ডিং দীঘি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:
- নোয়াখালী জিলা স্কুল
- চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজ
- নোয়াখালী সরকারি কলেজ
- বেগমগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
- কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট - চৌমুহনী
- মদনমোহন উচ্চ বিদ্যালয়
- অরুণ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়
- সপ্তগাঁও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়
ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক স্থান সমূহ:
- গান্ধি আশ্রম
- মহাত্মা গান্ধী জাদুঘর - জয়াগ, সোনাইমুড়ী
- বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোহাম্মদ রুহুল আমিন গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর - সোনাইমুড়ি
- ঠাকুর রামচন্দ্র দেবের সমাধি আশ্রম - চৌমুহনী
- নোয়াখালী দেবালয় - মাইজদী
- প্রতাপপুর রাজবাড়ী - সেনবাগ
- কল্যান্দি জমিদার বাড়ি
- বাংলাদেশের প্রাচীন ঐতিহ্য সুবিশাল আকৃতির সুউচ্চ "মঠ" - দশানী টবগা গ্রাম, চাটখিল, নোয়াখালী
অন্যান্য:
- পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার - নোয়াখালী
- শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম
- মুছাপুর ক্লোজার
- গোয়ালখালী বিচ - মোহাম্মদপুর, সুবর্ণচর
- চৌমুহনী পৌর মহাশ্মশান - চৌরাস্তা
- চেয়ারম্যানঘাট - হাতিয়া
নোয়াখালীর বিখ্যাত খাবার কি
নোয়াখালীর বিশেষ কিছু বিখ্যাত খাবার রয়েছে। আপনি যদি নোয়াখালী ভ্রমণে যান, তাহলে সেই খাবারগুলোর স্বাদ নিতে পারেন। নোয়াখালীতে বিভিন্ন ধরনের বিখ্যাত খাবার থাকলেও তার মধ্য থেকে মরিচ খোলা, নারকেল নাড়ু, ম্যারা ও খোলাজা পিঠা, সেমাই পিঠা, হাঁসের মাংসের মালাইকারি ইত্যাদি অধিক জনপ্রিয়।
নোয়াখালীর পূর্ব নাম কি
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে নোয়াখালী জেলাকে অভিহিত করা হয়েছে। প্রাচীন এই জনপদ পূর্বে ভুলুয়া নামে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে এই অঞ্চলটি সুধারাম নামে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। তবে এই জনপদের নাম নোয়াখালী কিভাবে হল সেই বিষয়ে একটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়।
বলা হয় যে ১৯৬০ সালের দিকে ডাকাতিয়া নদীতে ব্যাপক প্লাবন হয় যা ত্রিপুরার পাহাড় থেকে প্রবাহিত হয়েছিল। এই প্লাবনের কারণে ভুলুয়া অঞ্চলের উত্তর পূর্বাঞ্চল রামগঞ্জ, সোনাইমুড়ি এবং চৌমুহনী অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়।
এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য তৎকালীন প্রশাসন নদীর এই ধারাকে মেঘনা এবং ফেনী নদীর দিকে প্রবাহিত করার জন্য বিশাল একটি খাল খনন করেন। সেই খালটিকে স্থানীয়রা আঞ্চলিক ভাষায় নোয়া (নতুন) খাল নামে অবহিত করে। পরবর্তীতে এই নোয়াখাল পরিবর্তিত হয়ে "নোয়াখালী" নামে পরিচিতি লাভ করে।